ওহিও: রবিবার ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল দশ'টা। ছুটতে ছুটতে প্রেমিকের সঙ্গে থানায় আসেন বছর ২৯-র মহিলা ব্রিটনি গনজে। উদ্বিগ্ন মা জানান, ছ'বছরের ছেলে জেমস হাচিনসন নিখোঁজ। কোনও সময় নষ্ট না করে তদন্তে নামে মিডল টাউনের পুলিশ। শুরু হয় জেমসকে খোঁজাখুঁজি। কালো ফ্রেমের চশমা পরা লাল চুলের ছোট্ট ছেলের ছবি শহরের চারিদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয় তাকে খুঁজে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে। কিন্তু না জেমসকে পাওয়া যায়নি। আর কখনও যাবে না।
মা যে এমন হতে পারে, তা এই প্রতিবেদন না পড়লে আপনার পক্ষেও বিশ্বাস করা কঠিন। কথায় বলে, 'কু-সন্তান যদিও বা, কু-মাতা কভু নহে।' অর্থাৎ, সন্তান বাবা-মায়ের সঙ্গে একাধিক খারাপ কাজ করে থাকেন, খেতে না দেওয়া থেকে মারধর, বাড়ি থেকে উৎখাতের একাধিক খবর প্রায় রোজই সংবাদপত্রে মেলে। কিন্তু মা-বাবা সন্তানের ক্ষতি করেছেন, এ সংবাদ হাতে গোনা। জেমস সেই গুটি কয়েক দুর্ভাগা সন্তানদের মধ্যে অন্যতম।
আসলে জেমস হারিয়ে যায়নি। তাকে খুন করে ওহিও নদীর জলে ফেলে দিয়েছিল মা ব্রিটনি। সে কথা প্রকাশ্যে আসে সোমবার। পুলিশ জানিয়েছে, ব্রিটনি নিজে ছেলেকে একটি পার্কে নিয়ে গিয়ে তাঁকে গাড়ির চাকায় পিষে হত্যা করে। এরপর তার প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জেমসকে ছুঁড়ে ওহিও নদীর জলে ফেলে দেয়। সব মিটে যাওয়ার পরে রবিবার পুলিশের দ্বারস্থ হন আষাঢ়ে গল্প ফেঁদে। যদিও গল্পে কাজ হয়নি। পুলিশ ব্রিটনিকে খুনে দায়ে গ্রেফতার করেছে। এ ছাড়াও পুলিশকে মিথ্যা বলা এবং প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ব্রিটনি এবং প্রেমিক হ্যামিলটনের আরও দুই সন্তানকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সিনসিনাটি থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের জনপদে ঘটা এই মর্মান্তিক ঘটনা শহরের মানুষদের নাড়িয়ে দিয়েছে। দুরন্ত, ফুটফুটে জেমসের মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না তার প্রতিবেশীরা। পুলিশি জেরায় ব্রিটনি নিজে মুখে খুনের কথা স্বীকার করলে, কেন সে এমন ঘটনা ঘটান তা নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি। ফলে ধন্ধে রয়েছে পুলিশ। তবে ছোট্ট জেমসের জেহ এখনও উদ্ধার হয়নি। তাঁর দেহ উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু জলের অত্যন্ত গভীরতা এবং স্রোতের জন্য উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
 


 
 
 
 
0 Comments